আজ ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গুইমারায় প্রভাব বিস্তার করে বনের গাছ কেটে সমতলে পাচারের অভিযোগ

নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাহাড়ি বনাঞ্চল ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের জোত পারমিটের আড়ালে অশ্রেণিভুক্ত ও সংরক্ষিত সরকারি বনের গাছ কেটে পাচার করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। বিভিন্ন সংস্থার নাম ভাঙ্গিয়ে কোনো প্রকার অনুমতি এবং পারমিট না নিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি টাকার গাছ কেটে সাবার করে দিচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে একটি প্রভাবশালী চক্র এই অপকর্মে জড়িত। ইতিমধ্যে চক্রটি বিভিন্ন এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন ও সরকারি সংরক্ষিত বনের সেগুন, গর্জন, আকাশীসহ বিভিন্ন প্রজাতির বিপুল পরিমাণ গাছ কেটে পাচার করে দিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, খাগড়াছড়ি গুইমারার বাইল্যাছড়ি, সিন্দুকছড়ি, তৈকর্মা, কালাপানি, পাতাছড়া, মানিকছড়ির বাটনাতলী, বড়ডলু, যোগ্যছোলা এলাকা থেকে কাঠ পাচারকারী চক্র বনের গাছগুলো কেটে নিয়ে পাচার করছে সমতলে। আর এসব কাজে বনবিভাগ কর্তৃক কোনো জোত পারমিট নেওয়া হয়নিও বলে জানা গেছে।

তৈকর্মা স্কুলের পূর্ব পাশের পাহাড়ে প্রায় ৯ থেকে ১০একরে মূল্যবান কাঠ কেটে উজার করে দিয়েছে একটি মহল। অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে নানান হুমকির সম্মুখিন হতে হয় বলে জানা গেছে।

সচেতন মহল বলেন, প্রায় প্রতিদিন প্রাকৃতিক ও সংরক্ষিত বনে অবৈধ ভাবে গাছ কাটা ও পাচার চলছে। শুষ্ক মৌসুম আসলে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে গুইমারা উপজেলার বাইল্যাছড়িতে একশ্রেনীর প্রভাবশালী চক্র অবৈধ গাছ ব্যবসায়ী এর যোগসাজসে দিনে দুপুরে কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন জাতের গাছ কেটে পাচার করে দিয়েছে। আর তাদের গাছ কাঁটার অনুমতি ও রোড ক্লিয়ারেন্স করে দেওয়ার জন্য মোটা অংকের অর্থ নিয়ে থাকে স্থানীয় বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা।

দিনের পর দিন টাকার বিনিময়ে অসাধু বন কর্মকর্তাদের সহায়তায় উপজেলার বিভিন্ন পাহাড় থেকে প্রতিনিয়ত এ কাঠ পাচার করে আসছে সংঘবদ্ধ চক্রটি। প্রতিদিন জোত পারমিটের নামে হাজার হাজার ঘনফুট বিভিন্ন জাতের কাঠ প্রকাশ্যে পাচার করে আসলেও বনবিভাগ কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ কাজ করছে।

পরিবেশবাদীরা বলেন, গাছ বাঁচলে বাঁচবে মানুষ। বর্তমান সময়ে বনভূমি উজাড়ের ফলে এ পরিবেশ ও জনজীবন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। কিছু অসাধু লোক সংরক্ষিত বনাঞ্চল নিধন করে ফেলছে। যারা এই কাজে সম্পৃক্ত তাদেরকে যদি আইনের আওতায় এনে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করা না হয় তাহলে সামনে ভয়াবহ প্রাকৃতিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আমাদের।

এবিষয়ে জালিয়াপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মহসিন তালুকদার বলেন, একটি মহলের দোহাই দিয়ে অবৈধ ভাবে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গাছ কেটে বন উজার করা হচ্ছে। যারা এ অবৈধ কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বলেন, অনুমতিবিহীন সংরক্ষিত কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন বনের গাছ কাটা আইনত দন্ডনীয়। যারা এসব অবৈধ কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

You cannot copy content of this page