নুরুল আলম:: প্রশাসনের নিরব ভূমিকাকে পুজি করে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম, ফেনী-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি, মানিকছড়ি-খাগড়াছড়ি, দিঘিনালা-বাঘাইছড়ি, খাগড়াছড়ি-পানছড়িসহ খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুইপাশে অবৈধভাবে আবাসস্থল ও দোকানপার্ট নির্মাণ করে দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়, এসকল অবৈধ কাজের সাথে স্থানীয় সড়ক ও জনপদের কিছু অসাধু কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছে। গুইমারা উপজেলার হাতিমুড়া বাজারে দুইপাশে অবৈধভাবে দখল করে বিভিন্ন স্থায়ীভাবে দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। উক্ত জায়গায় সড়ক ও জনপদের রাস্তার উপরে সামিয়ানা টাঙিয়ে কাঁচা মালামাল বিক্রয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে। গুইমারা বাজারের উপজেলা পরিষদের রাস্তার দুই পাশে অবৈধভাবে সামিয়ানা টাঙিয়ে মালামাল বিক্রয়ে মেতে উঠেছে একটি ব্যবসায়ী মহল।
এছাড়া গুইমারা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সামনে মহাসড়কের পাশে দোকান (মটর গেরেজ) নির্মাণ করে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। গুইমারা উপজেলার ডাক্তারটিলা এলাকায়ও মহাসড়কের পূর্ব পাশে এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী পাকা দালান তৈরি করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে। সে ঘরটি নির্মাণের কারণে বর্তমানে ফুটপাত দিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে এবং যানবাহন চলাচলের সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে সড়ক উন্নয়নের কাজ করার সময় এসব স্থাপনা বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই এসব অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানায় স্থানীয় সচেতন মহল।
খাগড়াছড়ি-ফেনী, চট্টগ্রাম- খাগড়াছড়ি ও খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি মহাসড়কসহ জেলার সব উপজেলার মহাসড়কের দুইপাশে অবৈধ দখল করে রয়েছে শত শত অবৈধ দখলদার। অবৈধভাবে দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করার ফলে সড়কের দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির ঘটনা ব্যাপক হাড়ে বেড়েই চলেছে। এসকল স্থাপনা উচ্ছেদ করলে দুর্ঘটনা কমবে।
অন্যদিকে জালিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাথেই মহাসড়কের দুইপাশ দখল করে ফার্ণিচারের দোকান, ভাতের হোটেল, গ্যারেজসহ ঘরবাড়ি নির্মাণ করে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একটি দুষ্টচক্র। মোটা অংকের অর্থ বিনিময় করে এদের সাথে প্রশাসনও জরিত রয়েছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। বর্তমানে প্রশাসনের এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নত করা না গেলে ভবিষ্যতে এরা আরো ব্যপরোয়া হয়ে উঠার আশংকা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের দুই পাশ ও খাল বিল দখল করে এসব দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। যা সরকারের নিয়ম বহির্ভূত। প্রশাসনের নাগের ডগায় এমন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকে নিয়ে এলাকায় ছড়িয়েছে নানান তর্কবিতর্ক। তার ভিতর নতুন করে জালিয়াপাড়ায় একটি প্রভাবশালী মহল পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকায় মহাসড়কের পূর্বপাশের খাল, রাস্তা ও ফসলী জমি ভরাট করে অবৈধ দখলদারিত্ব চালিয়ে দোকান নির্মাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
খাল ও রাস্তা দখল করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে দোকান ঘর নির্মাণকারীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জায়গাটি আমি খাস হিসাবে দখল করেছি। বর্তমানে দোকান ঘর নির্মাণ কাজ চলছে।
সম্প্রতি গুইমারার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণে মেতে উঠেছে সুমন মজুমদার নামে এক ব্যক্তি। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখা-লেখি শুরু হলে স্থানীয় সড়ক ও জনপদ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলে সুমন মজুমদার জায়গার কাগজ দেখা। কিন্তু তার দেখানো জায়গার কাগজের সাথে চৌহুর্দ্দির কোনো মিল পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
সচেতন মহলের জোর দাবি, এই অবৈধ স্থাপনাগুলো অচিরেই না সরিয়ে নিলে যানবাহন চলাচলে অসুবিধা ও সড়ক দুঘর্টনা বেড়ে যাবে। তাছাড়া এ ব্যপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের আরো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে কুচক্রী মহল উৎসুক হবে। প্রশাসনের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে গুইমারা স্থানীয় অফিসের সওজ বিভাগের কর্মকর্তা কাউসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অবৈধ স্থাপনার নির্মাণ করতে সরকার যে নির্দেশ দিয়েছে তা বাস্তবায়নে সড়ক ও জনপদ বিভাগ কর্মকার্তা-কর্মচারী কাজ করে যাচ্ছে। দ্রুত গতিতে আইনি প্রক্রিয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কার্যক্রম পরিচালনা করবো।
বিষয়টি নিয়ে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, স্থানীয় সড়ক ও জনপদের কর্মকর্তারা দায়িত্বে আছে তাদেরকে এ বিষয় নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র দেখে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply