নুরুল আলম :: সহিংসতা এড়াতে শুক্রবার দুপুর ২ট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজাজামান।
খাগড়াড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায় ফৌজধারী কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ১৪৪ ধারা মতে আদেশে বলা হয় খাগড়াছড়ি সদর থানা এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালি সংগঠনের লোকজন আলাদা-আলাদাভাবে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয় এবং উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটে। এবং তৎপ্রেক্ষিতে সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রাপ্ত অধিযাজন পত্রে উক্ত এলাকার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি চরম অবনতির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ থাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কতিপয় ব্যক্তি একত্রে মিলিত উক্ত স্থানে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নত হতে পারে প্রতিয়মান হওয়ায় খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পৌরসভা এলাকায় শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ফৌজদারী কার্যাবিধি ১৪৪ ধারা আরোপ করা হলো।
উল্লেখ, মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মামুন নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যার জেরে বুধবার থেকে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে দীঘিনালায় সাধারন শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে একদল দুবৃত্ত হামলা চালালে পরিস্থিতি সম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ আশংকায় হয় । পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে দীঘিনালা লারমা স্কয়ারে অর্ধশতাধিক দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবস্থান নেয় পাহাড়িরা। রাতে পানছড়িতে সেনাবাহিনীর গাড়ি ও ফায়ার সার্ভিসের হামলার ঘটনা ঘটে। জেলা সদরের নারায়নখাইয়া ও স্বনির্ভর বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে পাহাড়িরা। এ সময় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়।
যার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতায় খাগড়াছড়ি সদরে ২ জন ও দীঘিনালায় একজন নিহত ও অপর ১৩ জন আহত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে আরএমও ডাক্তার রিপল বাপ্পি। নিহতরা হচ্ছে খাগড়াছড়ি সদরের জোনাল চাকমা (২৫), রুবেল ত্রিপুরা (২১) ও দীঘিনালার ধনরঞ্জন চাকমা (৩০)। ‘আহতদের মধ্যে ৯ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর শক্রবার সেনবাহিনীর দীঘিনালা জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল ওমল ফারুক, জেলা প্রশাসক মো. সজিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল শুক্রবার দুপুরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দীঘিনালা বাজার হতাহতদের দেখতে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতলে যান। এ সময় তারা গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন,জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথে নিয়ে সমন্বিত কাজ চলছে।এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়া বলেন কারো উস্কানি চক্রান্তে নেতা কর্মিদের কান না দেওয়ার ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের প্রতিরোধ করতেও নেতাকর্মিদের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি পাহাড়ি-বাঙালি সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্রামে গ্রামে প্রহড়া বসানোর আহবান জানিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন,শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসরা দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করছে। উল্লেখ, বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে এক বাঙালি যুবককে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply