নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়ি ইসলামিয়া ফাজিল/ডিগ্রী মাদ্রাসায় শিক্ষার নামে চলছে শুভংকরের ফাঁকি। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটি এবতেদায়ী থেকে পর্যায়ক্রমে উন্নিত হয়ে ১৯৯৭ সালে দাখিল ও ২০২২ সালে আলিম পর্যায়ে এমপিও ভুক্ত হয়।
একই সাথে ২০২২ সালে ফাজিল (ডিগ্রী)দর পাঠদানের অনুমোদন হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক স্বল্পতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এবতেদায়ী (প্রাথমিক) থেকে ফাজিল (ডিগ্রী ) পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দেয়া তথ্য মতে মোট শিক্ষক রয়েছে মাত্র ১৫ জন। তার মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক শাখার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বুলবুল আহাম্মদ (ইনডেক্স নাম্বার গ০০৩২০১৫) ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফরিদপুরে একটি বিদেশি ভাষা শিক্ষার কোচিং সেন্টারে চাকরি করার কারণে মাদ্রসায় অনুপস্থিত থাকলেও রহস্য জনকভাবে শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর হয়ে যায়। মাসের শুরুতে বেতন নিয়ে চলে যায়। অদৃশ্য রহস্যের কারণে মাদ্রাসার সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সংশ্লিষ্ট্যরা বেতন বিলে স্বাক্ষর করে বছরের পর বছর সহযোগিতা করে আসছে শিক্ষক বুলবুল আহম্মদ কে। অভিযোগ রয়েছে, মাসিক ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে মাদ্রসা কর্তৃপক্ষ এমন সুযোগ দিয়ে আসছে।
অপরদিকে ২০২২ সালে ফাজিল/ডিগ্রী পাঠদানের অনুমতি পেলেও শিক্ষক নেই এক জনও। মাঝে প্রাথমিকে শিক্ষক দিয়ে চলে ফাজিল /ডিগ্রীর পাঠ দান। তাও নিয়মিত নয়। সকাল ৯টায় ১ম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত এক সাথে শুরু হয় শ্রেণী কার্যক্রম। বিভিন্ন অযুহাতে নিয়মিত দুপুর ১২ থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে এক সাথে ছুটি হয় সকল শ্রেণী। প্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোন ক্লাস রুটিন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার সুপার সাইফুল ইসলাম অসুস্থতার কারণে সহ-সুপার শেখ আহাম্মদকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার দায়িত্ব দিলে তিনি নিজের ব্যস্ততা দেখিয়ে মাদ্রাসা থেকে চলে যান। শিক্ষক শূন্য থাকলেও তিনি সে দিন মাদ্রাসায় আসেন নি। এদিকে অফিস সহকারীও মাদ্রাসার কাজে বাহিরে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাদ্রাসার সুপার।
সিনিয়র শিক্ষক ছালে আহাম্মদ জানান, এক সাথে ১২টি ক্লাস শুরু হলে নিয়মিত ৪টি ক্লাস ফাঁকা থাকে। ৮টিতে পাঠ দান চলে। এতে করে শিক্ষক শূন্য ৪ ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বিশৃঙ্খলার জন্য অন্যান্যদের পাঠ দানে ব্যাঘাত ঘটে। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বুলবুল আহাম্মদ এ ব্যপারে কথা বলতে রাজি নন।
এদিকে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের ভিত্তিতে মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শরিফুল ইসলাম বিদ্যুৎ গত ২৯ মে সরজমিনে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, বিষয়টি সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক বুলবুল আহাম্মদকে বিগত দিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকায় পরবর্তী ৩ কার্য দিবসে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ৪ জুন বিকাল পর্যন্ত কোন জবাব দেয়া হয়নি বলে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
বিষয়টি সম্পর্কে খবর নিয়ে সত্যতা পেয়েছেন উল্লেখ করে তবলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ বলেন, বিষয়টি নিরসনে প্রয়োযনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply